বাংলাদেশের ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও নানা জটিলতার কারণে পরীক্ষার সময়সূচি বারবার স্থগিত করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়নের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে।
২০২৪ সালের এইচএসসি ব্যাচ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অর্ধেক সময় পেয়েছে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে। সাধারণত ২০২৪ সালের পরীক্ষার্থীরা দুই বছরের প্রস্তুতির সময় পেয়েছিল, কিন্তু চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বারবার পরীক্ষার স্থগিতাদেশের কারণে তারা মাত্র এক বছর বা তারও কম সময়ে প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হয়েছে। এই সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে, তাদের প্রস্তুতিতে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি হয়েছে, যা তাদের ভবিষ্যতের শিক্ষাজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে।
শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের আরও একটি বড় কারণ হলো, এইচএসসি পরীক্ষা বিলম্বিত হওয়ার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তারা কম সময় পাবে। এই পরিস্থিতি তাদের জন্য দ্বিগুণ চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, কারণ একদিকে এইচএসসি পরীক্ষার চাপ, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি—দুটিই তাদের জন্য একই সময়ে সামাল দিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের একাডেমিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
সরকার শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি নজর রাখছে এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। তবে, এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে যা করা প্রয়োজন, সরকার তা করবে। তবে শিক্ষার্থীরা দ্রুত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে, কারণ তাদের শিক্ষা জীবন ও ভবিষ্যতের ওপর এই সিদ্ধান্তের বড় প্রভাব পড়বে।
শিক্ষার্থীদের সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়নের দাবি একটি যৌক্তিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যেতে পারে, বিশেষত যখন তাদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। সরকারকে দ্রুত এবং বিবেচনামূলক সিদ্ধান্ত নিতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকে এবং শিক্ষাব্যবস্থা সঠিক পথে থাকে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ