বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলির ফলে দেশটির অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক সম্পর্কগুলিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। বিশেষত, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন নতুন সরকারের সাথে পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার মুখে দাঁড়িয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দুই দেশের সম্পর্ক এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, সেখানে সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি এই সম্পর্কের ভিন্নমাত্রা নিয়ে এসেছে।
ড. ইউনুস ও নরেন্দ্র মোদি | ছবিঃ সংগৃহীত |
ভারত এবং বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ধরে গভীর বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতার একটি অনন্য সম্পর্ক ভাগাভাগি করে আসছে। শেখ হাসিনার সরকার বিগত ১৫ বছর ধরে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। তবে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে, বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগমন ঘটে। নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে পুনর্বিবেচনা করার জন্য একটি নতুন সুযোগ প্রদান করেছে।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, ভারতের উচিত নতুন সরকার এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্য রেখে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা। তিনি উল্লেখ করেন যে, “ভারতের উচিত বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং তরুণ প্রজন্মের চাহিদাকে বিবেচনা করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।” এই সম্পর্ক শুধু সরকার এবং রাজনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, বরং দুই দেশের জনগণের মধ্যে একটি শক্তিশালী বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া উচিত।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত যে সহায়তা করেছিল, তা দুই দেশের জনগণের মধ্যেকার সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে। তবে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির কারণে, এই সম্পর্কের মধ্যে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিশেষত, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতার দ্রুত পরিবর্তন ভারতকে নতুন করে এই সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাচ্ছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন একটি নতুন দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ভারত সরকারের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করা অত্যন্ত জরুরি। এই নতুন সম্পর্ক উভয় দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করবে এবং দুই দেশের মধ্যে শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ভিত্তিতে, উভয় দেশের উচিত এই নতুন অধ্যায়ে যৌথভাবে কাজ করে একটি শক্তিশালী, পারস্পরিক সম্মান এবং সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি শুধু দুই দেশের জন্য নয়, বরং গোটা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রেক্ষাপটে, নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক পুনর্গঠন ভারতের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দায়িত্ব।
0 মন্তব্যসমূহ