বাংলাদেশে পেঁপে একটি বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় ফল। এর উচ্চ পুষ্টিগুণ, সহজ চাষ পদ্ধতি এবং সারাবছর উৎপাদনের সুবিধার কারণে কৃষকদের মধ্যে পেঁপে চাষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। পেঁপে চাষ একটি লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে, বিশেষত যদি সঠিক পদ্ধতি এবং যত্নের মাধ্যমে চাষ করা হয়।
পেঁপে চাষ | ছবিঃ সংগৃহীত |
পেঁপে একটি পুষ্টিকর ফল হিসেবে পরিচিত। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, এবং ই রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া পেঁপে হজমশক্তি বাড়াতে এবং ত্বককে সুন্দর রাখতে সহায়ক।
বাংলাদেশের উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া পেঁপে চাষের জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত। পেঁপে গাছের ভালো বৃদ্ধি এবং ফলন পেতে উর্বর ও সুনিষ্কাশিত দোঁআশ মাটি প্রয়োজন। চারা রোপণের জন্য বর্ষাকাল (জুন-আগস্ট) সবচেয়ে উপযুক্ত সময়, তবে বাগানভিত্তিক চাষে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসেও চারা রোপণ করা যায়।
পেঁপে চাষের জন্য উচ্চফলনশীল জাতের বীজ ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। বীজ থেকে চারা তৈরি করার জন্য বীজ বপনের আগে ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। চারা ২০-৩০ সেন্টিমিটার উচ্চতা অর্জন করলে তা মূল জমিতে রোপণ করা হয়। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২-৩ মিটার রাখলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
পেঁপে গাছে নিয়মিত সেচের প্রয়োজন হয়, বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে। ভালো ফলনের জন্য গোবর সার, ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি সারের সুষম ব্যবহার করতে হবে। গাছের চারপাশে মালচিং করলে মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং আগাছা কম হয়।
রোগবালাই ও প্রতিকার
পেঁপে গাছ বিভিন্ন ধরনের রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হতে পারে, যেমন পাউডারি মিলডিউ, পোকা-মাকড়, ভাইরাসজনিত রোগ। এসব রোগ থেকে গাছকে রক্ষা করতে নিয়মিত ছত্রাকনাশক এবং কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। ভাইরাসজনিত রোগের ক্ষেত্রে আক্রান্ত গাছ দ্রুত উঠিয়ে ফেলতে হবে।
পেঁপে চারা রোপণের ৬-৯ মাসের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। ফল পাকার পর সংগ্রহ করতে হবে, যাতে বাজারজাতকরণের সময় ফলের গুণগত মান বজায় থাকে। বাংলাদেশে পেঁপের চাহিদা সারা বছরই থাকে, তাই এটি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।
বাংলাদেশের কৃষি খাতে পেঁপে চাষের সম্ভাবনা ব্যাপক। সঠিক পদ্ধতি ও যত্নের মাধ্যমে পেঁপে চাষ করলে কৃষকরা সহজেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন। তাছাড়া, পেঁপে চাষ দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্যসূত্র:
0 মন্তব্যসমূহ