বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান সম্প্রতি টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য প্রদান করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, গত সাড়ে ১৭ বছর দেশের জনগণের জন্য ছিল এক দুঃসহ কালো রাত। তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে সেদিন সারা দেশে লগি-বইঠা নিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এটাই ছিল ফ্যাসিস্ট শাসনের সূচনা।
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান আজ টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন | ছবিঃ সংগৃহিত |
ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সেনাবাহিনীর ওপর আঘাত হেনেছে। পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ৫৪ জন সামরিক অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ওই সময় মহিলা সদস্যদেরও নির্যাতন, লাঞ্ছনা ও হত্যা করা হয় এবং তাদের লাশ ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়। এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের আজও বিচার হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন এবং বলেন, সেনাবাহিনীকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচারের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ৪২ বছর ধরে যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না, তাদের বিরুদ্ধে হঠাৎ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। তিনি দাবি করেন, মিথ্যা মামলা এবং সাজানো সাক্ষীর ভিত্তিতে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় ১১ জন নেতাকে বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে মানুষ অবিচারের শিকার হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, কারও বিরোধী মতামত প্রকাশ করলে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আটক করা হচ্ছে এবং সাংবাদিকরাও এই আইনের আওতায় নির্যাতিত হচ্ছেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সরকার একটি বিভাজিত জাতি তৈরি করেছে এবং জনগণকে অব্যাহতভাবে জুলুমের শিকার করা হচ্ছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমির আহসান হাবিব। বক্তব্য প্রদান করেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ এবং টাঙ্গাইল শহর শাখার সভাপতি মামুন আব্দুল্লাহ। এছাড়াও জামায়াতের নেতা-কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এই ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান তার দলের ওপর চলমান বিচার ও দমন-পীড়নের প্রতিবাদ করেন এবং ভবিষ্যতে দেশের জনগণকে এসব অবিচার থেকে মুক্ত করতে চায় বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
মুক্ত প্রকাশ
প্রতিবেদন: সম্পাদকীয় বিভাগ
0 মন্তব্যসমূহ