গাজায় আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলায় ৮ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলি বাহিনীর সাম্প্রতিক বিমান হামলায় গাজার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে। এই হামলা গাজার মানবিক সংকটকে নতুন মাত্রা দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

গাজায় আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা ছবিঃ aljazeera 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে গাজার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি আশ্রয়কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়। আশ্রয়কেন্দ্রটি গাজার বেসামরিক জনগণের জন্য একটি নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। হামলার পরপরই, উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসাবশেষের মধ্য থেকে আটজন নিহতের দেহ এবং বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু এবং মহিলা রয়েছে, যা হামলার অমানবিক দিকটি আরও স্পষ্ট করে তোলে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের হামলার কারণ হিসেবে দাবি করেছে যে, গাজার বিভিন্ন স্থল থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট হামলা হয়েছে এবং এটি তাদের নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলা লক্ষ্য ছিল ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ এবং এটি একটি সামরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা উচিত। 

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং এটিকে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ তুলেছে। International Human Rights সহ বিভিন্ন সংস্থা গাজার বেসামরিক জনগণের ওপর পরিচালিত এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে এবং এর জন্য আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলি বলছে যে, এই হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং এটির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা উচিত।

এই হামলার ফলে গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রের ধ্বংস এবং পরিবহন ব্যবস্থার অবনতি শহরের বেসামরিক জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ কঠিন করে তুলেছে। বিদ্যুৎ এবং পানির সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে, এবং চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রগুলো জরুরি সহায়তার অভাবে সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং মানবিক সংস্থাগুলি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য চরম চেষ্টা করছে, কিন্তু সীমিত সম্পদ এবং অব্যাহত হামলার কারণে তাদের প্রচেষ্টা কার্যকরী হচ্ছে না।

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি গাজার মানবিক সংকটের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস, এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থা গাজার জনগণের জন্য জরুরি সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে গাজার জনগণের মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণের আহ্বান জানিয়েছে। 

যুদ্ধের এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা এবং গাজার জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি অপরিহার্য। আশ্রয়কেন্দ্রের হামলার এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মঞ্চে গাজার সংকটের গভীরতা এবং এই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। 

মুক্ত প্রকাশ

প্রতিবেদন: আন্তর্জাতিক ডেস্ক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ