দেশের বাজারে ডিমের দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়কে বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডজন প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। গত সপ্তাহে যেখানে এক ডজন ডিমের দাম ছিল ১৬০ টাকা, এই সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকায়। শুধুমাত্র গত তিন সপ্তাহেই ডিমের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য বিরাট ধাক্কা।
ডিমের বাজারে আগুন | ছবিঃ সংগৃহিত |
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন থেকে চার সপ্তাহ আগেও ডিমের দাম ডজন প্রতি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। তবে বর্তমানে প্রতিটি বাজারে ডিমের দাম চড়া। বিশেষ করে ময়মনসিংহের ত্রিশল বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, যা থেকে একটি ডিমের দাম দাঁড়াচ্ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা। অন্যদিকে, এক হালি ডিমের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, অর্থাৎ প্রতি পিস ডিমের মূল্য গড়ে ১৪ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। পাইকারি বাজারে ১০০ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ থেকে ১১৭০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, ডিমের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। তবে কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ানোর অভিযোগ উঠলেও, তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এক ব্যবসায়ী বলেন, "চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় ডিমের দাম বাড়ছে। আমাদের এখানে মজুতের কোনো ঘাটতি নেই।"
এদিকে, খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, খাদ্যের দাম, বিদ্যুৎ বিল, এবং ঔষধের উচ্চমূল্যের কারণে ডিম উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এক খামারি বলেন, "আমাদের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে, যার প্রভাব বাজারে পড়ছে। যদি খাদ্য ও অন্যান্য উপকরণের দাম কমে, তবে ডিমের দামও কমানো সম্ভব হবে।" তিনি আরও যোগ করেন, "ভারত থেকে ডিম আমদানি করা গেলে দেশের বাজারে ডিমের দাম কমবে বলে আশা করা যায়।"
বন্যার পর থেকে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে ডিমের দাম বাড়ার ধারা শুরু হয়। তখন থেকে বাজারে ডিমের সরবরাহ কমতে থাকে, যা মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
দেশের ডিমের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছে এবং সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তারা মনে করছে, যদি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং ভারত থেকে ডিম আমদানি করা হয়, তবে ডিমের মূল্য আবারও সাধারণ মানুষের নাগালে আসবে।
মুক্ত প্রকাশ
প্রতিবেদন: সম্পাদকীয় বিভাগ
0 মন্তব্যসমূহ