জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা তাদের পাঁচ দফা দাবি আদায়ে সোমবার (১১ নভেম্বর) থেকে সচিবালয় অভিমুখে আন্দোলনে নেমেছেন। প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি, এবং ইউজিসির পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তি। দীর্ঘদিনের এ দাবিগুলো বাস্তবায়নে আশ্বাস না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তারা।
দুপুরে ক্যাম্পাস থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে গণপদযাত্রা শুরু করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ভবনের সামনে এসে জমায়েত হন। সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা দাবি পূরণের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি স্লোগানের মাধ্যমে আহ্বান জানান। মিছিলের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়নের জন্য দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিনের। এছাড়া বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও জরুরি অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিত করাও জরুরি হয়ে পড়েছে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি জমা দিতে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল, শিক্ষা সচিব তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করবেন। কিন্তু সচিব নিজে সাক্ষাৎ না করে প্রতিনিধি পাঠানোয় আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সচিবালয়ের গেটে অবস্থান নেন। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, “আমরা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে সরাসরি শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষা সচিব প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন, যা আমাদের জন্য অসম্মানজনক। আমাদের দাবি, শিক্ষা সচিব বা শিক্ষা উপদেষ্টা সরাসরি এসে আমাদের কথা শুনবেন।”
এরপর ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় আসেন। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দেন, তাদের প্রধান দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত এবং শিক্ষা সচিব নিজে এসে কথা না বলা পর্যন্ত তারা সচিবালয়ের গেট ত্যাগ করবেন না। শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টার উপস্থিতি স্বত্বেও তাদের দাবিতে অনড় থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র সোহানের মতে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের অধিকার আদায়ে সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে নেমেছে, এবং তারা এই অবস্থান থেকে পিছু হটবে না। তিনি আরও বলেন, “দাবিগুলো আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দাবি শুধু আমাদের নয়, এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর অধিকার।”
শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান, একেএম রাকিব, রাইসুল ইসলাম নয়ন, আসাদুল ইসলাম, আবু বকর খান, নওশীন নাওয়ার, সোহান প্রামাণিক, মাসুদ রানা, নূর নবী, ওমর ফারুক, ফেরদৌস শেখ এবং অপু মুন্সী। তাদের সকলেই আন্দোলনকারীদের পক্ষে সচিবালয়ের গেটে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা তাদের দাবির যৌক্তিকতা ও প্রয়োগযোগ্যতা নিয়ে কোনো ধরনের আপোস করতে রাজি নয়। দাবি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি পাওয়া না গেলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মুক্ত প্রকাশ
প্রতিবেদন: সম্পাদকীয় বিভাগ
0 মন্তব্যসমূহ